নেপালের পোখারা বিমানবন্দরে ইয়েতি এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ৬৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন। গতকাল (রোববার) রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে পোখারা যাওয়ার পথে বিমানটি অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয়। বিমানে যে দুই পাইলটের মৃত্যু হয়েছে তাদের একজন অঞ্জু খাতিওয়াদা।

কাকতালীয় ব্যাপার হচ্ছে, ২০০৬ সালে অঞ্জুর স্বামীও মৃত্যুবরণ করেন একইরকম আরেকটি বিমান দুর্ঘটনায়। ১৭ বছর আগে এমনই এক বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন তার স্বামী। তিনিও ছিলেন বিমানের কো পাইলট। ঘটনাচক্রে সেটিও ছিল এই ইয়েতি এয়ারলাইন্সেরই একটি বিমান। সেই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ৬ জন যাত্রী এবং ৪ জন বিমানকর্মীর।

এত বছর পরে একইভাবে প্রাণ হারালেন অঞ্জু খাতিওয়াড়া। স্বপ্নপূরণের মাত্র কয়েক সেকেন্ড আগেই থেমে গেল অঞ্জুর যাত্রা। কারণ এই বিমানটি সফলভাবে অবতরণ করাতে পারলেই কো পাইলট থেকে ক্যাপ্টেন হিসেবে উন্নীত হতেন অঞ্জু। যা ছিল তার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন।

রোববার নেপালের পোখরায় ভেঙে পড়া ইয়েতি এয়ারলাইন্সের এটিআর ৭২ বিমানটির পাইলট ছিলেন কমল কে সি। অঞ্জু ছিলেন কো পাইলট। কো পাইলট হিসেবে এটিই ছিল তার শেষ ফ্লাইট। কমল কে সি অঞ্জুর প্রশিক্ষকও ছিলেন।

কো পাইলট থেকে পাইলট বা ক্যাপ্টেন পদে উন্নীত হওয়ার জন্য অন্তত ১০০ ঘণ্টা বিমান ওড়ানোর অভিজ্ঞতা থাকা প্রয়োজন। রোববার পোখরার নতুন বিমানবন্দরে ইয়েতি এয়ারলাইন্সের এই বিমান নিয়ে অবতরণ করতে পারলেই সেই মাপকাঠি পেরিয়ে যেতেন অঞ্জু। বিমান অবতরণের জন্য খুব বেশি হলে আর দশ সেকেন্ড সময় লাগত। কিন্তু মুহূর্তের মধ্যে তালগোল পাকিয়ে গেল সবকিছু। অভিশপ্ত বিমানের আগুনেই পুড়ে ছাই হয়ে গেল অঞ্জু স্বপ্ন।

কীভাবে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে নানা মত উঠে আসছে। পাইলটের ভুল ছিল কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। ইয়েতি এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, বিমানের পাইলট কমল কে সির বিমান ওড়ানোয় ৩৫ বছরের অভিজ্ঞতা ছিল। অতীতে বহু শিক্ষনবিশ পাইলটদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন তিনি। যারা আজ সফলভাবে পাইলট হিসেবে পরিচিত।

রোববার নেপালের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় বিমানে থাকা ৭২জনের মধ্যে ৬৮ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। বাকি চারজন নিখোঁজ রয়েছেন। তাদেরও এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।